|| মাটি এন্টারটেইনমেন্ট

প্রকাশিত: ১২:১১, ১৯ মার্চ ২০২০
আপডেট: ১৬:৪৮, ১৯ মার্চ ২০২০

বিভাগের পাঠকপ্রিয়

করোনা ঠেকাতে ‘কোয়ারেন্টাইন’, যা মেনে চলবেন

করোনা ঠেকাতে ‘কোয়ারেন্টাইন’, যা মেনে চলবেন

ছবি: প্রতীকী

‘কোয়ারেন্টাইন’ শব্দটি এখন সবার মুখে মুখে। তবে এটি সম্পর্কে আমরা কতটুকু জানি? আবার আইসোলেশন কিংবা হোম কোয়ারেন্টাইনের অর্থই বা কী? করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে এখন সবারই উচিত এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানা। কারণ নিজে জানলে অন্যকেও জানাতে সুবিধা হবে। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মতামতই বা কী?

‘আইসোলেশন’ শব্দটির সঙ্গে করোনার সম্পর্ক কী?

মোটা দাগে করোনাভাইরাসের লক্ষণ যেমন-জ্বর, ঠাণ্ডা বা কাশি প্রকাশ পায়। এমতাবস্থায় সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট অর্থাৎ করোনা ধরা পড়লে তাকে আইসোলেশনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় চিকিৎসক ও নার্সদের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে রাখা হয় রোগীকে। অন্য রোগীদের থেকে আলাদা রাখা হয় এই ভাইরাসে আক্রান্তদের। 

অন্তত ১৪ দিনের মেয়াদে আইসোলেশন চলে। শারীরিক অবস্থার গতিবিধি লক্ষ্য করে আইসোলেশনের মেয়াদ বাড়তে পারে। এসময় রোগীকে কারো সঙ্গে যোগাযোগও করতে দেয়া হয় না। যদিও এখনো পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধে কোনো কার্যকরী ওষুধের দেখা মেলেনি। তবে আইসোলেশনে থাকা রোগীদেরকে চিকিৎসকরা কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করে। 

এসব ওষুধের কারণে রোগীর শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো হয়। ভয়ের বিষয় হলো, যেসব আক্রান্তের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকে। আর যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যস্থা বেশি ও করোনার প্রকোপ অল্প তারা দ্রুতই সুস্থ হতে পারেন। এখনো পর্যন্ত কঠিন এই ব্যাধি থেকে যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় এক্ষেত্রে কাজ করেছে।

‘কোয়ারেন্টাইন’ এ থাকা মানে কী?

ধরুন, আপনার শরীরে করোনাভাইরাস প্রবেশ করেছে। তাৎক্ষণিক আপনি এর লক্ষণ টের পাবেন না। কমপক্ষে এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে ভাইরাসটি আপনার শরীরে বংশববিস্তার করে। তাই এই সময় যদি আপনার সঙ্গে কেউ মেলামেশা করে বা স্পর্ষ করে তবে তার শরীরেও ভাইরাসটির প্রবেশ ঘটবে। তাই কোয়ারেন্টাইন পদ্ধতির মাধ্যমেই কারো শরীরে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা হয়। এবার আপনার মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে, তবে কেন হাসপাতালে নয় বরং ঘরেই কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়? 

কারণ হাসপাতালে অনেক রোগী থাকে। তারা যাতে আক্রান্ত না হয় এজন্য কোয়ারেন্টাইনে নিজ ঘর বা জনমানবহীন কোনো ঘরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। এক্ষেত্রেও কমপক্ষে ১৪ দিনের সময়সীমা রয়েছে। এসময় যদিও কোনো ব্যক্তিকে ওষুধপত্র দেয়া হয় না। শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। মূলত বাইরে বের হওয়া বন্ধ করতেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়। এতে করে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যায়। 

 জেনে নিন ‘হোম কোয়ারেন্টাইন’ সম্পর্কে

নিজ বাড়িতেই যখন গৃহবন্দী। বিষয়টি ঠিক এমনই। নিজ বাড়িতে থেকেও এসময় পরিবার পরিজনদের থেকে আলাদা থাকতে হবে। কারো সঙ্গে মেলামেশা, কথাবার্তা বা বেশি সময় কাটানো যাবে না। নিজেকে পুরোপুরি একঘরে করে রাখতে হবে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত যে কোনো দেশ থেকে ঘুরে নিজ দেশে এলেই রোগীকে হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়। 

এ বিষয়ে নিশ্চয়ই আপনি এরইমধ্যে জেনেছেন! এক্ষেত্রেও কমপক্ষে ১৪ দিন আলাদা থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ সময় রোগীকে কোনো ওষুধ নয় বরং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয়। তবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খাবারে মনোযোগ দেয়া যেতে পারে। এসময় স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্প নেই। 

এবার তবে জেনে নিন করোনাভাইরাসে কীভাবে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন?

১. পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। এক বাড়িতে থাকলেও আলাদা ঘরে একাকী থাকুন। 

২. আলো ও বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ঘরটি থাকার জন্য বেছে নিন।

৩. আলাদা টয়লেট বা বাথরুম ব্যবহার করুন। 

৪. যদি কোনো স্তন্যদায়ী মা’কে কোয়ারেন্টাইন মানতে হয় তবে তিনি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। সেইসঙ্গে সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন, পারলে গ্লাভস পরুন।
 
৫. বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে অন্তত এক মিটার দুরত্ব বজায় রাখুন। বিশেষ প্রয়োজনে এসময় বাড়ি থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন।

৬. মাস্ক ব্যবহারের পর ডাস্টবিনে ফেলুন। এরপর সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।

৭. সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন।

৮. হাত ধোয়ার পর টিস্যু দিয়ে মুছে তা ডাস্টবিনে ফেলে দিন।

৯. অপরিষ্কার হাতে কখনো চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না।

১০. ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিসপত্র অন্য কারো সঙ্গে শেয়ার করবেন না। এছাড়াও প্লেট, গ্লাস, তোয়ালে, বিছানার চাদর ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।