বান্দরবানের ইকোট্যুরিজম সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ
বান্দরবান পার্বত্য জেলায় বিদ্যমান পাহাড়, নদী ও গিরিপথের নৈসর্গিক সৌন্দর্য পর্যটনের কাজে লাগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব। এজন্য সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ বান্দরবানের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে "স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের ভূমিকা" শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
বান্দরবান জেলা প্রশাসন এবং জেলা তথ্য অফিসের সহযোগিতায় আঞ্চলিক তথ্য অফিস (পিআইডি) চট্টগ্রাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আঞ্চলিক তথ্য অফিস (পিআইডি) চট্টগ্রামের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর হোসেন আহসানুল কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন। এতে মুখ্য বক্তা হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন দিক, প্রস্তুতি ও সম্ভাবনার দিক তুলে ধরেন তথ্য অধিদফতর ঢাকার সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. আবদুল জলিল।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আঞ্চলিক তথ্য অফিস (পিআইডি) চট্টগ্রাম এর সিনিয়র তথ্য অফিসার মারুফা রহমান ঈমা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বান্দরবান জেলার সহকারী পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন , অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফজলুর রহমান, বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল হক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মান্নান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বান্দরবান আয়তনের দিক থেকে তৃতীয় বৃহত্তম ও পর্যটন নির্ভর জেলা। জেলাটির সমৃদ্ধির কথা মাথায় রেখেই পর্যটন স্পট ৬৪টি থেকে বাড়িয়ে ৮৪ টিতে উন্নীত করা হয়েছে। বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ সুবিধা ও নিরাপত্তা বিবেচনায় রেখে একটি অ্যাপস চালু করা হয়েছে। পর্যটন শিল্পকে নিয়েই বান্দরবান জেলাকে স্মার্টকরণের কার্যক্রম ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
মূখ্য বক্তা হিসেবে সিনিয়র উপপ্রধান তথ্য অফিসার আবদুল জলিল বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ মানে হচ্ছে বস্তুবাদী চেতনার পাশাপাশি মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটানো।প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবন জোরদার করে স্থানীয় পর্যায়ে বিদ্যমান সম্পদ ও সামর্থ্যের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি গঠনে সুশীল সমাজ ও গনমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে বলে উল্লেখ করেন।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে স্থানীয় পর্যটন সম্ভাবনা কাজে লাগানোর পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী জোরদার করতে হবে। পার্বত্য এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদকেন্দ্রিক রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যেতে হবে। তারা সরকারি দপ্তরগুলোতে তথ্য প্রাপ্তির সুযোগ সহজ করার পরামর্শ দেন।
বক্তারা আরো বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ ও উপযোগী হতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন, ডিজিটাল আর্কাইভিংসহ নানামুখী সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। বান্দরবানে বসবাসরত ১১টি নৃগোষ্ঠীর ভাষা বৈচিত্র্যের বিষয়টি মাথায় রেখে একটি ট্রাসলেটর (অনুবাদ) অ্যাপস তৈরির পরামর্শ দেন।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বান্দরবানে কর্মরত প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও নিবন্ধিত অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিক, জেলা পর্যায়ে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, শিক্ষকসহ সুশীল সমাজের শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।