Deprecated: str_replace(): Passing null to parameter #3 ($subject) of type array|string is deprecated in /home/metvbdco/public_html/common/config.php on line 148
কেমন ছিল টাইগারদের ২০১৯ সাল

|| মাটি এন্টারটেইনমেন্ট

প্রকাশিত: ০০:৪৭, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯

বিভাগের পাঠকপ্রিয়

কেমন ছিল টাইগারদের ২০১৯ সাল

কেমন ছিল টাইগারদের ২০১৯ সাল

ছবি : সংগৃহীত

সময়ের আবর্তে মহাকালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে আরো একটি বছর। ২০১৯ সালে প্রায় বছরজুড়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত ছিল টাইগাররা। এর মাঝে আছে আনন্দের কিছু মূহুর্ত, রয়েছে দুঃসহ অনেক স্মৃতিও। আনন্দ-বেদনা মিলিয়ে মিশ্র অনুভূতির একটি বছরই কাটিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গন।

এ বছরই প্রথমবারের মতো দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এছাড়া ক্রিকেট বিশ্বকাপও অনুষ্ঠিত হয়েছে এ বছরে। টাইগার ক্রিকেটে এ বছরের বিস্তারিত নিয়েই ডেইলি বাংলাদেশ পাঠকদের জন্য আজকের আয়োজন:

নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে ২০১৯ সালের ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত এ সিরিজে সূচি অনুসারে ৩টি করে ওয়ানডে ও টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা ছিল। তবে শেষ টেস্ট না খেলেই দেশে ফিরে আসে টাইগাররা।

ওয়ানডে সিরিজটা শুরু হয় হতাশা দিয়ে। তিন ম্যাচেই মাশরাফীর দল পরাজিত হয় বড় ব্যবধানে। টেস্ট সিরিজেও ছিল ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি। প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ৫২ রানে হারের পর দ্বিতীয় টেস্টে সাকিব-মুশফিকরা হেরে যায় ইনিংস ও ১২ রানের ব্যবধানে। তৃতীয় ও শেষ টেস্ট ক্রাইস্টচার্চ হামলার ফলে বাতিল করা হয়। এ ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটার।

এরপর বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে আয়ারল্যান্ড সফর করে বাংলাদেশ। সেখানে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজে অংশগ্রহণ করে টাইগাররা। এখানেই বহুজাতিক টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো শিরোপা লাভ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গ্রুপ পর্বে ৪ ম্যাচের তিনটিই জেতার পর ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫ উইকেটে হারিয়ে এ কৃতিত্ব অর্জন করে মাশরাফীরা। বাকী একটি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়।

বাংলাদেশের বিশ্বকাপ সফর ছিল আশা নিরাশার দোলাচলে ভরপুর। স্মরণকালের সেরা দল নিয়েই বিশ্বকাপে যায় লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে শুভ সূচনা করে টাইগাররা। এরপর একটানা নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে যায় সাকিব-তামিমরা। লংকানদের সঙ্গে ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তুলে নেয় দুর্দান্ত এক জয়।

সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখা বাংলাদেশ এরপর বাকি চার ম্যাচে মাত্র একবার জয়ের মুখ দেখে। অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে হার মানে যথাক্রমে ৪৮, ২৮ ও ৯৪ রানে। তবে আফগানদের বিপক্ষে তুলে নেয় ৬২ রানের জয়। ৯ ম্যাচে ৩ জয়ে পয়েন্ট তালিকার আটে থেকে হতাশার টুর্নামেন্ট শেষ করে মাশরাফীর দল।

ব্যর্থ বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরেই আবার লংকাদ্বীপে উড়াল দেয় টাইগাররা। তবে এই সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফী ও সাকিব আল হাসান খেলেননি। ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী বাংলাদেশ সফরের তিন ম্যাচেই হেরে যায়।

মাস দুয়েক বিরতি দিয়ে ঘরের মাঠে বছরের প্রথম সিরিজ আয়োজিত হয় সেপ্টেম্বরে। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে এক ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ২২৪ রানে হেরে যায় সাকিবের দল।

এরপর জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তানকে নিয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে অধরা জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। চার ম্যাচের তিন ম্যাচে জয় পেয়ে ফাইনালে উঠলেও বৃষ্টি বাঁধায় পন্ড হয় ফাইনাল।

অক্টোবর মাসটা বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে ছিল আলোচিত একটি সময়। এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ক্রিকেটারদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ধর্মঘট হয়, যার নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব। বিসিবি সবকিছু মেনে নেয়ার ঘোষণা দিলে ধর্মঘট সফল হয় ঠিকই, তবে এর দিন দুয়েক পরেই বড় আঘাত পায় টাইগার ক্রিকেট। জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন রাখার অভিযোগে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় দলের প্রাণভোমরা সাকিব আল হাসানকে।

টালমাটাল পরিস্থিতিতে নভেম্বরের শুরুতে বহুল প্রতীক্ষিত ভারত সফর করে টাইগাররা। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব না থাকায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেতৃত্ব দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টেস্ট দলের নেতৃত্বভার দেয়া হয় মুমিনুল হককে। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে ৭ উইকেট হারিয়ে শুভ সূচনা করে রিয়াদের দল। তবে পরের দুই ম্যাচে ৮ উইকেট, ৩০ রানে হেরে সিরিজ খোয়ায় বাংলাদেশ।

টেস্ট সিরিজের ফলাফলও খুব একটা সুখকর ছিলো না টাইগারদের জন্য। ইন্দোরে অনুষ্ঠিত পরথম টেস্ট ইনিংস ও ১৩০ রানে হারার পর কলকাতায় হেরে যায় ইনিংস ও ৪৬ রানে। তবে কলকাতা টেস্ট দিয়ে দিবা-রাত্রির টেস্টের যুগে পা রাখে বাংলাদেশ। যা টাইগার ক্রিকেটে এক ঐতিহাসিক মূহুর্ত হিসেবেই বিবেচিত হয়েছে।

২০১৯ সালে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৬টি টেস্ট, ২৫টি ওয়ানডে ও ৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর ভেতর টেস্টে ৫ ম্যাচেই হারের মুখ দেখেছে তারা, একটি হয়েছে পরিত্যক্ত। ৩টি টি-টোয়েন্টিতে জয় পেয়েছে এক ম্যাচে। অপরদিকে ২৫ ওয়ানডেতে ১০ ম্যাচে জয় ও ১২ ম্যাচে পরাজিত হয়েছে টাইগাররা। পরিত্যক্ত হয়েছে ৩টি ম্যাচ।

সব মিলিয়ে এ বছর টাইগারদের সফলতার হার ৩২.৩৫ শতাংশ। খুব সফল না হলেও ব্যর্থ বছরও বলা যাচ্ছে না। এ বছরই প্রথমবারের মতো বহুজাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টাইগাররা। এ অগ্রযাত্রা সামনে আরো বেগবান হবে, এই স্বপ্নে নতুন বছরে পা দিচ্ছে বাংলাদেশ।