|| মাটি এন্টারটেইনমেন্ট

প্রকাশিত: ১৪:১৮, ১৫ নভেম্বর ২০২০
আপডেট: ১৪:২৬, ১৫ নভেম্বর ২০২০

বিভাগের পাঠকপ্রিয়

আইকনিক অভিনেতা সৌমিত্র চ্যাটার্জি মারা গেলেন

আইকনিক অভিনেতা সৌমিত্র চ্যাটার্জি মারা গেলেন

ছবি: সংগৃহীত

না ফেরার দেশে প্রখ্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চ্যাটার্জি। রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করেছে।

কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে দীর্ঘ ৩৯ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন সৌমিত্র চ্যাটার্জি। রোববার (১৫ নভেম্বর) সকালে এ অভিনেতার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। অচল হয়ে পড়ে তার মস্তিষ্কের স্নায়ু। চিকিৎসকরাও আশার আলো দেখছেন না বলে জানান। সর্বশেষ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমালেন এই বরেণ্য শিল্পী। 

গত ৯ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পাঠানো চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল সৌমিত্র চ্যাটার্জিকে দেখতে যান। সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে চিকিৎসকরা ট্রাকিওস্টোমি করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা মনে করেন—এই পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে নিশ্চিতভাবে উপকৃত হবেন সৌমিত্র চ্যাটার্জি। এরপর ফুসফুসে বেশি অক্সিজেন পৌঁছে দিতে গত ১১ নভেম্বর অভিনেতা সৌমিত্র চ্যাটার্জির শ্বাসনালীতে অস্ত্রোপচার (ট্রাকিওস্টোমি) করা হয়।

করোনা সংকটের কারণে দীর্ঘ দিন টলিউড ফিল্মইন্ডাস্ট্রির শুটিং বন্ধ ছিল। সতর্কতা মেনে সম্প্রতি শুটিংয়ের অনুমতি মেলে। যথাযথ সুরক্ষা মেনে শুটিংয়ে ফিরেছিলেন সৌমিত্র। নিজেকে নিয়ে তৈরি একটি তথ্যচিত্রের শুটিং করছিলেন। এর মধ্যে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৬ অক্টোবর কলকাতার কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই শিল্পীকে। এরপর করোনামুক্ত হলেও তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যা বাড়তে থাকে।

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন সৌমিত্র চ্যাটার্জি। চ্যাটার্জি পরিবারের আদিবাড়ি ছিল বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কাছে কয়া গ্রামে। সৌমিত্রের দাদার আমল থেকে চ্যাটার্জি পরিবার নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে বসবাস শুরু করেন। সৌমিত্র পড়াশোনা করেন—হাওড়া জেলা স্কুল, স্কটিশ চার্চকলেজ, কলকাতার সিটি কলেজ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

১৯৫৯ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসার’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। পরবর্তীতে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ১৪টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সৌমিত্র। মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় করের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। কবি ও খুব উচ্চমানের আবৃত্তিকার হিসেবে তার দারুণ খ্যাতি রয়েছে।

২০১২ সালে ভারতের চলচ্চিত্রাঙ্গনের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন সৌমিত্র। ২০০৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ পান তিনি। তাছাড়া ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সংগীত নাটক একাডেমি পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারসহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন এই শিল্পী। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের অসংখ্য সম্মাননা তার প্রাপ্তির ঝুলিতে জমা পড়েছে। উল্লেখযোগ্য হলো—ফ্রান্সের ‘লেজিয়ঁ দ্য নর’ (২০১৮)।