|| মাটি এন্টারটেইনমেন্ট

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ৪ ডিসেম্বর ২০১৯
আপডেট: ০০:৫২, ১০ ডিসেম্বর ২০১৯

বিভাগের পাঠকপ্রিয়

দূষণ কমিয়ে বিশ্বে প্রথম স্থান সবুজে ঘেরা রাজশাহী

দূষণ কমিয়ে বিশ্বে প্রথম স্থান সবুজে ঘেরা রাজশাহী

ছবি : সংগৃহীত

গাছগাছালি ও সবুজের সমারোহে রাজশাহী নগরী। শহরের যেদিকে চোখ যায়, শুধু সবুজ আর সবুজ। এরই মধ্যে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ভাসমান কণা কমানোর ক্ষেত্রে বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করেছে দেশের উত্তরের এই নগরী। 

২০১৬ সালের জুনে জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের দি গার্ডিয়ান ওই তথ্য জানায়। পরিবেশবান্ধব নগরী গড়তে ২০১১ সাল থেকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন জিরো সয়েল প্রকল্প বাস্তাবায়ন করছে।

এ প্রসঙ্গে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, এই প্রকল্পের আওতায় এরই মধ্যে ১০ কিলোমিটার সড়কে নানা প্রজাতির সবুজ গাছ লাগানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আগে গরমের সময় পদ্মা চরের বালি শহরের সব জায়গায় উড়ে এসে পড়ত। এতে পুরো শহরই ধুলোময় হয়ে থাকত। এটা নিত্যদিনই ঘটতো। সে সময় থেকে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে গাছ লাগানো হয়েছে। এছাড়া যে সব জায়গায় গাছ লাগানো সম্ভব নয়, সেখানে ঘাষ লাগিয়ে গ্রিন জোন তৈরি করা হয়েছে। 

নগরবাসীদের মতে, রাজশাহী নগরীতে ভারী পরিবহণ কম চলাচল করা ও ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সার ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় কমেছে দূষণ। এছাড়া পরিবেশ দূষণ রোধে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। 

এসব উদ্যোগের কথা জানিয়ে রাসিক মেয়র বলেন, প্রতিটি বাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে শহরের সেকেন্ডারি পয়েন্টে নেয়া হয়। সেখান থেকে রাতের বেলা নিয়ে যাওয়া হয় ভাগাড়ে।

এদিকে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ভাসমান কণা প্রসঙ্গে উদ্ভিদবিজ্ঞানী অধ্যাপক এম মনজুর হোসেন বলেন, ১০ মাইক্রোমিটার অথবা তার চেয়ে কম ব্যাসের কণা কোনো নির্দিষ্ট উৎস অথবা জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে প্রকৃতিতে ছড়িয়ে যায। এরা সরাসরি শ্বাসনালি হয়ে ফুসফুসে ঢুকে, যা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এই কনা ডিজেলচালিত যানবাহন থেকে বেশি ছড়ায়।

তার মতে, বর্তমানে রাজশাহীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থাকার কারণে ডিজেলচালিত যানবাহন শহরে ব্যবহৃত হচ্ছে না। রাজশাহীর বাতাসে এই কণা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুলতান উল ইসলাম বলেন, রাজশাহী নগরের চারদিকে সবুজ বেষ্টনী থাকায় পাশের পদ্মা নদীর চরও সবুজ ঘাস ও কাশবনে ছেয়ে গেছে। এসব জায়গার কোথাও ফসলও হচ্ছে। এ কারণে আগের মতো ধূলিঝড়ও হয় না।

তিনি আরো বলেন, রাজশাহী নগরের পদ্মা নদীর পরিত্যক্ত ধারে পরিকল্পিত পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে বিকেলে অনেকেই হাঁটাহাটি করেন। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার টাইলস দিয়ে তৈরি হাঁটার পথ পদ্মার নির্মল বাতাসের একটি উৎস।

এছাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় ছাদ কৃষিতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও সবুজায়ন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ফুটপাতসহ শহরের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় গাছ লাগানো হচ্ছে।