|| মাটি এন্টারটেইনমেন্ট

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ১৩ আগস্ট ২০২০
আপডেট: ১৭:১৩, ৪ জানুয়ারি ২০২১

বিভাগের পাঠকপ্রিয়

গ্লোবের করোনা ভ্যাকসিন চলতি বছরেই আসবে

গ্লোবের করোনা ভ্যাকসিন চলতি বছরেই আসবে

ছবি: সংগৃহীত

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিস্কার নিয়ে উন্নত বিশ্বসহ সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের প্রতিযোগীতা যখন তুঙ্গে, ঠিক সেই সময়ই আশার বানী শোনালেন দেশীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রুপ অব কোম্পানিজ লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। তাদের দাবি, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষেই দেশের বাজারে আসবে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন।

প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের প্রধান ডা. আসিফ মাহমুদ ডেইলি বাংলাদেশকে এমনটাই জানান।

করোনার ভ্যাকসিনের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখনো অ্যানিমেল ট্রায়ালের মধ্যেই আছি। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই এ ট্রায়াল শেষ হবে। সবকিছু ঠিক-ঠাক থাকলে চলতি বছরের শেষে অর্থাৎ ডিসেম্বরের মধ্যেই দেশের বাজারে ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করছি। 

ডা. আসিফ মাহমুদ বলেন, অ্যানিমেল ট্রায়াল শেষে হিউম্যান ট্রায়ালের (মানুষের মধ্যে প্রয়োগ) জন্য আবেদন করা হবে। হিউম্যান ট্রায়ালের তিনটি ধাপ শেষ করে ভ্যাকসিনটি বাজারে আসবে।

ভ্যাকসিন প্রক্রিয়ার পরিক্রমায় কোনো প্রতিবন্ধকতা বা সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। সব জায়গা থেকে আমরা প্রচন্ড উৎসাহ, উদ্দিপনা ও সহযোগীতা পাচ্ছি।

ডা. আসিফ বলেন, যেহেতু এখনো আমরা নিজেরাই নিজেদের কাজ করে যাচ্ছি এখনো তাই আমাদের কোনো রেগুলেটারি বডির কাছে যেতে হচ্ছে না। আশা করছি, পরে আমরা সে সহযোগীতাও পাবো।
 
তিনি বলেন, একটাই প্রতিবন্ধকতা আছে। সেটি হলো আমাদের রি-এজেন্ট প্রয়োজন। একটা রি-এজেন্ট কিনে সেটা দেশে আনা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমাদের যে রি-এজেন্টগুলো দরকার সেগুলো বাংলাদেশে কেউ করে না। সে জিনিসগুলো বিদেশ থেকে আনা ও কাস্টমস থেকে বের করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এসব জিনিস নিয়ে আমরা একটু সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। তবে এগুলো গতানুগতিক।

তিনি জানান, অ্যানিমেল ট্রায়ালের জন্য ভ্যাকসিন দেয়ার পর কিছু অ্যানালাইসিস রয়েছে। যার জন্য আপাতত কিছু রি-এজেন্ট দরকার। সব জিনিস এখনো হাতে না এলেও চেষ্টা করে যাচ্ছি, খুব দ্রুতই সেগুলো চলে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

অ্যানিমেল ট্রায়ালের জন্য ব্যবহৃত ভ্যাকসিনটি কতটুকু নিরাপদ ও কার্যকর জানতে চাইলে তিনি বলেন, হিউম্যান ট্রায়ালের আগে দুটি বিষয় অ্যানিমেল ট্রায়ালে অবশ্যই কনফার্ম করতে হয়। এই অ্যানিমেল ট্রায়াল শেষ করেই নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী ধাপে যাব। ভ্যাকসিনটিকে এমনভাবে তৈরি করতে হচ্ছে যাতে সরাসরি মানুষের শরীরে দেয়ার উপযোগী হয়। এসব কারণে সময় একটু বেশি লাগছে বলে জানান ডা. আসিফ মাহমুদ।

তিনি আরো বলেন, বিশ্বের সব দেশই ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। এরইমধ্যে রাশিয়া ঘোষণাও দিয়েছে। এছাড়াও বেশকিছু দেশ থেকে ঘোষণা শিগগিরই আসতে পারে। তবে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন নিয়ে কেউ কাজ করছে এমনটা আমার জানা নেই। তাই দেশে কেউ যদি পারে তাহলে আমরাই পারবো। কারণ, কাজটা তো শুরু করেছি আমরা। গ্লোব এতদূর এসেছে থেমে যাওয়ার জন্য নয়। অবশ্যই এর শেষ দেখতে চাই আমরা। আমার মনে হয়, কেউ যদি পারে বাংলাদেশে গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডই পারবে।

প্রসঙ্গত, গত ২ জুলাই প্রতিষ্ঠানটি দেশে প্রথম ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। সেদিন তারা জানায়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা কেন্দ্রে প্রাণীর ওপর ট্রায়াল চলছে এবং বাকি কাজ চলছে তাদের ল্যাবে। গত ৮ মার্চ তারা এই টিকা আবিষ্কারের কাজ শুরু করেন এবং সব পর্যায়ের কাজ শেষ করে দেশীয় বাজারে এ ভ্যাকসিনটি আসতে সময় লাগতে পারে আরো ৭ থেকে ৮ মাস। সে অনুসারে চলতি বছরের শেষেই দেশের বাজারে পাওয়া যাবে গ্লোবের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন।